পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, আজ টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। দুটি ভাগে এই পরীক্ষা চলে। দুই অর্ধে ছটি করে টেবিল বসিয়ে মোট ৩৬ জন শিক্ষক প্রতিনিধি সংসদের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেন। যাঁরা ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন তাঁরা সকলেই বিভিন্ন প্রাথমিক, হাইস্কুল ও কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। কিন্তু, ব্যতিক্রম ছিলেন ওই ওষুধ বিক্রেতা। তাঁকে ঘিরেই গোল বাধে।
বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি শিলিগুড়ির নামী একটি ওষুধের দোকানের মালিক। প্রাক্তন শিক্ষকের খোঁজ করতে গিয়ে কেন একজন ওষুধ ব্যবসায়ীকে ইন্টারভিউ বোর্ডে নেওয়া হল সেই প্রশ্ন উঠছে এখন। ABTA-র প্রশ্ন, শহরে কি আর কোনও প্রাক্তন শিক্ষক ছিলেন না ?
সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরে এককালে শিক্ষকতা করতেন ওই ওষুধ বিক্রেতা। সেইসময় তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। পরে শিলিগুড়িতে এসে নিজের পেশা পালটে শুরু করেন ওষুধের ব্যবসা। অভিযোগ তৃণমূল নেতাদেরও ঘনিষ্ঠ তিনি।
আজকের এই ঘটনা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে পেশা পালটে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হলেও কেন ফের প্রাক্তন শিক্ষক হিসেবে ইন্টারভিউ বোর্ডে এলেন ? এর আগে কি আর কোনও সরকারি চাকরির নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে যুক্ত ছিলেন ? উত্তরে তাঁর জবাব, “ব্যস্ত আছি, কথা বলতে পারব না।”
রাজ্যের প্রায় সব জেলা থেকেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে আর্থিক লেনদেনের কিছু অভিযোগ সামনে এসেছে। তার মাঝেই ইন্টারভিউ নেওয়ার কাজ চালাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। আরও মজার কথা হল শিলিগুড়ি জেলা শিক্ষা সংসদে এখন কোনও স্থায়ী চেয়ারম্যানও নেই। DI দায়িত্ব নিয়ে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ঘুরপথে ইন্টারভিউ বোর্ডে ওই ওষুধ ব্যবসায়ী ঢুকে পড়ায় নানা প্রশ্ন সামনে আসছে।
এই বিষয়টি নিয়ে ওই ওষুধ ব্যবসায়ী কথা না বললেও মুখ খুলেছে ABTA। বাম শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক তমাল চন্দের অভিযোগ, “এই জমানায় সব সম্ভব। তাই প্রাক্তন শিক্ষকের আড়ালে এক ওষুধ বিক্রেতাকে নিয়োগ বোর্ডে বসানো হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বহু শিক্ষক আছেন। কর্মরত কয়েকলাখ শিক্ষক আছেন। তাঁদের কাউকে খুঁজে না পেলে সংসদ আমাদের বলতে পারত। আমরাই খুঁজে দিতাম নিরপেক্ষ প্রাক্তন শিক্ষক বা নিরপেক্ষ কর্মরত শিক্ষক।”
এদিকে, জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক বিজয়ালক্ষ্মী পালকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই নিয়োগ বোর্ডে কে কে থাকবেন তার তালিকা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকেই এসেছে। শুনেছি উনি প্রাক্তন শিক্ষক। সেই সূত্রেই নিয়োগ কমিটিতে এসে আজ ইন্টারভিউ নিয়েছেন তিনি।”
পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের জবাব, “ অযথা বিতর্ক করা হচ্ছে। এর বদলে অন্য কেউ এলেও হয়ত অন্য কোনও প্রশ্ন সামনে আসত। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবেই তিনি ওই নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। এতে দোষের কী হয়েছ?”
মন্ত্রীর মতোই এতে দোষ দেখছেন না রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যও। তাঁর সাফাই, “রাজ্যে অবশ্যই বহু অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন। কিন্তু, কাকে নিয়োগের বোর্ডে রাখা হবে তা পর্ষদের বিষয়। তা সংবাদমাধ্যম ঠিক করে দিলে হবে না।”
অবশ্য নেতা-মন্ত্রীরা যাই বলুন না কেন ওষুধ বিক্রেতাকে নিয়োগ বোর্ডে সামিল করায় শাসকদলের শিক্ষা সেলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেও জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে জেলা তৃণমূলের কয়েকজন নেতার ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই কি তাঁকে ইন্টারভিউ বোর্ডে নিয়োগ করা হয়েছে ? উত্তর মেলেনি এই প্রশ্নের।
এই ব্লগ টিকে লাইক শেয়ার করুন west bengal tet result latest news
To Know more visit given flowing Link :
http://www.jobnol.com/
http://bangla.eenaduindia.com/
No comments:
Post a Comment